ভোটের পরিবেশ নিয়ে যা বললেন পর্যবেক্ষক দল

রবিবারের ভোটকে অতীতের অন্য যে কোনো নির্বাচনের চেয়ে ভালো, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ বলেছে ভোট দেখতে আসা সার্ক হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশন ও ইলেকশন মনিটরিং ফোরাম। কানাডায় যে পরিবেশে ভোট হয় বাংলাদেশের পরিবেশও একই রকমের ছিল বলেও মন্তব্য করেছেন দেশটি থেকে ভোট দেখতে আসা একজন।

সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে আগের দিনের পর্যবেক্ষণের ফলাফল তুলে ধরে এই দুটি সংস্থা। তারা ভোটের পরিবেশকে ‘অতীতের চেয়েও ভালো, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষও’ বলেছে।

নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করতে আসা কানাডার পর্যবেক্ষক ও গবেষক তানিয়া ফস্টার বলেন, ‘নির্বাচনের পরিবেশ ছিল শান্তিপূর্ণ। পর্যবেক্ষণের সময় আমি ভোটারদের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা বলেছে, তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ নিশ্চিত করতে পেরেছে। ভোটের পরিবেশ দেখে আমার মনে হয়েছে, কানাডার মতোই ভোটের পরিবেশ এখানে। সেখানে যথেষ্ট নিরাপত্তা ছিল।’

‘তবে ঢাকার বাইরে শুনেছি কিছু জায়গায় সংঘাত হয়েছে। তবে আমরা যেখানে গিয়েছি, সেখানে কোনো সংঘাত হয়নি।’
আগের দিনের ভোটে সারাদেশেই অভাবনীয় জয় পায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও তার জোটের শরিকরা। বিরোধী পক্ষ বলতে গেলে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। শতকরা হিসাবে তারা ভোট পেয়েছে ১২.৫৫ শতাংশ। আর আসন পেয়েছে সাতটি মাত্র। আর আওয়ামী লীগ একাই পেয়েছে ২৫৬টি। জোটের শরিক জাতীয় পার্টি পেয়েছে ২২টি। ১৪ দলের শরিকরাও পেয়েছে আরো বেশ কিছু আসন।

এই নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করতে দেশের বাইরে থেকেও আসেন বেশ কয়েকজন পর্যবেক্ষণ ও সাংবাদিক। সার্ক মানবাধিকার ফাউন্ডেশনের বিশেষ প্রতিনিধি ও শ্রীলঙ্কার গবেষক এহসান ইকবাল বলেন, ‘আমরা সকাল আটটা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত বিভিন্ন নির্বাচন কেন্দ্র পরিদর্শন করেছি। এই সময়ের মধ্যে আমরা নয়টি ভোটকেন্দ্র ঘুরেছি। সবগুলো ভোটকেন্দ্রের পরিবেশ ছিল শান্তিপূর্ণ। যা ভোটারদের ভোটদানে উৎসাহিত করেছে। এটি বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে শান্তিপূর্ণ নির্বাচন। বলতেই হচ্ছে, নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা ইতিবাচক ছিল।’

নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ে কলকাতার গবেষক গৌতম ঘোষ বলেন, ‘আমরা দেখেছি, মানুষ নিজেদের মতো করে উৎসাহ নিয়ে ভোট দিয়েছে। মানুষ যেভাবে আনন্দের সঙ্গে ভোট প্রয়োগ করেছে তাতে বলাই যায়, তারা ভয়ভীতি মুক্ত হয়েই ভোটকেন্দ্রে এসেছে।’

কলকাতা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি সাংবাদিক কমল ভট্টাচার্য তার বক্তব্যে বলেন, ‘সবাই উৎসবমুখর পরিবেশের মধ্য দিয়ে ভোট দিয়েছেন। নির্বাচনী পরিবেশ ছিল শান্তিপূর্ণ। মানুষকে দেখেছি লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট দিচ্ছেন। আমি ভোটারদের কাছে জানতে চেয়েছিলাম, তারা নিজেদের ইচ্ছায় নাকি কারও বলপ্রয়োগে এখানে এসেছে। তারা বলেছে, তারা নিজেদের ইচ্ছায় ভোট দিতে এসেছে।’

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, সার্ক হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশনের বিদেশি পর্যবেক্ষকেরা তিনটি দলে ভাগ হয়ে রাজধানীর ২৪টি কেন্দ্র পরিদর্শন করেছেন। এ ছাড়া ইলেকশন মনিটরিং ফোরাম দেশের ২১৪ টি আসনের ১৭ হাজার ১৬৫টি কেন্দ্র পর্যবেক্ষণ করেছে।

সংবাদ সম্মেলনে বিদেশি পর্যবেক্ষকদের মধ্যে আরও বক্তব্য রাখেন মানবাধিকার কর্মী চ্যালি দেওয়ান ফস্টার, নেপাল কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী হাকিমুল্লাহ মুসলিম ও নেপাল কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য নাজির মিয়া প্রমুখ।

সূত্র: ঢাকাটাইমস